সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন,আতাহার সরকার!

নিউজ ডেক্স:

মুক্তিযুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখনো স্বীকৃতি পাননি সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার উপর সিলট গ্রামের মৃত আয়ন সরকারের ছেলে মো: আতাহার সরকার (৭১)।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম তালিকাভূক্ত না হওয়ায় জীবনের শেষ বয়সে এসে অবহেলায়, অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে মো: আতাহার সরকারের। কাধে-কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সহযোদ্ধারাও তার এই দুর্দশায় হতাশা ও অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করছেন।

মো: আতাহার সরকার বলেন ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহব্বানে বাংলাদেশকে শত্রুদের হাত থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে, লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের মতো আমিও আনসার বাহিনী থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদান করি। যুদ্ধ চলা অবস্থায় ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আব্দুল লতিফ মির্জা কর্তৃক পরিচালিত পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরে যোগ দেই, এবং সেখান থেকে তাড়াশ ভাঙ্গুরা এবং চাটমোহর বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার আলবদরদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। দেশ স্বাধীন হবার পর আমার অজ্ঞতার কারণে সেসময় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় আমার নামটা উঠাতে পারি নাই।
তিনি আরো বলেন সরকার থেকে ২০১৪ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের অনলাইনে আবেদন করতে বলা হলে আমি আবেদন ফরম সবকিছু নিয়ম অনুসারে প্রস্তুত করি কিন্তু, দুঃখজনকভাবে সেই কাগজের ফাইল আমি হারিয়ে ফেলি যার মধ্যে আমার মুক্তিযোদ্ধার সমস্ত কাগজপত্র ছিল নাম্বারটাও মনে রাখতে পারি নাই।

তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি বলেন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আতাহার সরকার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এবং পরবর্তী সময় আতাহার সরকার আনসার বাহিনীতে আমার অধিনে ডিউটি করে। এদিকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও সহযোদ্ধারা। জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে একজন দেশপ্রেমী হিসাবে নিজের নাম টুকু মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়, গেজেটভুক্ত দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আতাহার সরকার।

এব্যপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মেজবাউল করিম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমি বিষয়টি মাত্র জানলাম যাচাই বাছাই করে তাঁকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সৃকৃতি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিস্ট জমা দেব।
তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী মোঃ আরশেদুল ইসলাম আর্শেদ জানান আমার কাছে কেউ কোন আবেদন করেনি।

যেহেতু সহযোদ্ধারা বলছেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সে হিসাবে যাচাই-বাছাই করে মোঃ আতাহার সরকারকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।